১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে জমিদার দাতারাম মহোদয়ের প্রচেষ্টায় সুলতানপুরের একপ্রান্তে এ বিদ্যাপীঠের জন্ম। পরে ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে রাউজানের তদানীন্তন মুন্সেফ জনাব শোকর আলী এ বিদ্যাপীঠকে থানা সদরে স্থানান্তর করেন। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক বাবু ক্ষীরোদ চন্দ্র বিশ্বাসের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ডাবুয়ার তৎকালীন জমিদার বাবু রামগতি ধর ও বাবু রামধন ধর এর বৈষয়িক আনুকূল্যে ১৮৯৮ সালে এ প্রতিষ্ঠান উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং উক্ত সনে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯১৯ সালে ফটিকছড়ি নিবাসী আবদুল বারী চৌধুরীর অর্থানুকূল্যে এ প্রতিষ্ঠানের পাশে আরও একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে যা স্থানীয় সুশীল সমাজের তেমন একটা কাম্য ছিল না। ফলে স্থানীয় জনগণ ও বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী জনাব মৌঃ আবুল কাশেম বি,এল এবং বাবু রমেশ চন্দ্র ধর মহোদয়ের আন্তরিক প্রচেষ্টায় উভয় বিদ্যাপীঠকে সমন্বিত করে রাউজান-রামগতি-রামধন-আবদুল বারী চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় সংক্ষেপে রাউজান আর.আর.এ.সি. উচ্চ বিদ্যালয় নামে এ বিদ্যাপীঠের আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরবর্তীতে ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার গৃহীত যুগান্তকারী পদক্ষেপ এবং রাউজানবাসীর অতি প্রিয়ভাজন নেতা জনাব এ.বি.এম. ফজলে করিম চৌধুরী এম.পি এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে সরকারিকরণের প্রজ্ঞাপন আসে এবং প্রতিষ্ঠানটি সরকারি হয়।
শতবর্ষ অতিক্রমকারী রাউজান আর.আর.এ.সি. মডেল সরকারি হাই স্কুল বর্তমানে তার স্বকীয়তা ও ঐতিহ্যকে লালন করে সুনাম অক্ষুন্ন রেখে অত্র এলাকার জনসাধারণের হাতে শিক্ষার আলোকবর্তিকা তুলে দিচ্ছে। ১৮৩৫খৃ: এ বিদ্যালয়ের জন্ম হলেও ১৮৯৮ সালে উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যাবধি যাঁদের হৃদয়ে এ বিদ্যালয়ের জ্ঞানের ছোঁয়া লেগেছে, তাঁরাই বর্তমানে দেশে-বিদেশে, শিক্ষা-সংস্কৃতিতে ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গৌরবময় ভুমিকা রাখাছে এবং নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ বিদ্যালয় চট্টগ্রাম বিভাগের স্বাতন্ত্রকামী প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে অতি প্রাচীনতম। এ বিদ্যালয় শুধু আধুনিক যুগপোযোগী ও মানসম্মত শিক্ষাদানে বিশেষত্ব অর্জনে সীমাবদ্ধ তা নয়,বই কেন্দ্রিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা, সহ-পাঠ ক্রমিক শিক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বিদ্যালয়ের সুশৃংখল ও সু-পরিকল্পিত কার্যক্রম ও পদ্ধতিগত পাঠদান, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও খেলাধুলা সব ক্ষেত্রে বহিরাঙ্গনেও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে বিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি করেছে। এরই ফলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর যুগান্তকারী পদক্ষেপ প্রত্যেক উপজেলায় মানসম্মত একটি করে মাধ্যমিক স্কুল সরকারিকরণের ঘোষণানুযায়ী মান্যবর সাংসদ জনাব এ .বি. এম. ফজলে করিম চৌধুরী এমপি মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গত ২৪/০৯/১৮ খ্রিঃ তারিখে সরকারিকরণের প্রজ্ঞাপন আসে এবং সরকারিকরণ হয়। সরকারিকরণ হওয়ার পেছনে যাদের অবদান সংশ্লিষ্ট জনকে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণের ইতিবাচক পরামর্শে ও অভিক্ষ শিক্ষকমন্ডলীর একনিষ্ঠ প্রচেষ্টায় প্রতিবছর পাবলিক পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করে এবং ২০১৪ সালে শিক্ষামন্ত্রনালয় কর্তৃক রাউজান উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করে। শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের পূর্ণ বিকাশ ও মানবিক গুণের উন্মেষ ঘটিয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভে যেমন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর ভূমিকা থাকে, তেমনি অভিভাবকের ভূমিকাও অনস্বীকার্য। কারণ শিক্ষার পূর্ণতার জন্য “শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবক ” ত্রি-বিধ-সেতু বন্ধন প্রয়োজন।
পরিশেষে, সম্মানিত অভিভাবকগণের প্রতি আহবান,আপনার সন্তানকে সুশিক্ষিত, সুনাগরিক, ও আত্মনির্ভশীল হিসেবে গড়ে তোলার আমাদের দৃঢ় প্রত্যয়ে আপনার সহযোগিতা একান্ত কামনা করছি।
ঘন সবুজে ঘেরা, শ্যামল বনানীর আধারে পরিপুষ্ঠ
বাংলাদেশের মহা গৌরবের একটি আদর্শ জনপদ রাউজান। অসংখ্য ক্ষনজন্মা নমস্য মহাপুরুষ
রাউজানের মাটিকে করেছে পূণ্যময় এবং সূচিত হয়েছে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক। যে
যুগান্তকারী ইতিহাসের সাথে যু্ক্ত হয়ে উপজেলা সদরে উন্নত মস্তকে জ্ঞানের প্রদীপ্ত
শিখা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষাধিক কালের গৌরব গাঁথা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাউজান
আর.আর.এ.সি. মডেল সরকারি হাই স্কুল। এ গৌরবদীপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি যাঁরা প্রতিষ্ঠা
করে স্মরণের আবরণে বরণীয় হয়ে আছেন তাঁদের স্মৃতিকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি। আলোর
নান্দনিক বর্ণচ্ছটায় প্রোজ্জ্বল এরূপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক হিসেবে
নিজেকে পরিচয় দিতে পেরে যেন আনন্দের মহাসাগরে অবগাহন করছি।